⚖️ চিত্তরঞ্জন দাস: "দেশবন্ধু"র অমর জীবনগাথা 🇮🇳✨

👶 প্রারম্ভিক জীবন

🔹 পূর্ণ নাম: চিত্তরঞ্জন দাস
🔹 ডাকনাম: দেশবন্ধু
🔹 জন্ম: ৫ নভেম্বর ১৮৭০
🔹 জন্মস্থান: কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ 🏠
🔹 পিতা: ভুবন মোহন দাস (একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও ব্রাহ্মসমাজের সদস্য)
🔹 মাতা: নিভৃতচারী ও ধর্মভীরু নারী ছিলেন

ছোটবেলা থেকেই চিত্তরঞ্জন ছিলেন অসাধারণ মেধাবী, অনুভূতিপ্রবণ এবং মানবিকতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ। 📚💡


🎓 শিক্ষাজীবন

🔹 স্কুল জীবন: প্রারম্ভিক শিক্ষা প্রেসিডেন্সি কলেজিয়েট স্কুলে
🔹 কলেজ: প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা
🔹 পরে উচ্চতর আইনের পড়াশোনা করতে যান লন্ডনে 🇬🇧
🔹 ব্যারিস্টার হয়ে ফিরে আসেন ভারতবর্ষে এবং কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন ⚖️


⚖️ একজন খ্যাতনামা আইনজীবী

চিত্তরঞ্জন দাস একজন চৌকস ও প্রভাবশালী আইনজীবী ছিলেন।

💼 তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় মামলা ছিল অরবিন্দ ঘোষের আলিপুর বোমা মামলা (১৯০৯)।
তিনি সাহসিকতার সঙ্গে অরবিন্দকে রক্ষা করেন এবং মামলায় জয়লাভ করেন।

এই মামলার পর থেকেই তিনি জাতীয়তাবাদী বীর হিসেবে পরিচিত হন। 🙌🇮🇳


🇮🇳 রাজনীতিতে প্রবেশ ও কংগ্রেসে ভূমিকা

চিত্তরঞ্জন দাস ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

🔸 তিনি ১৯১৭ সালে কংগ্রেসে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ শুরু করেন
🔸 ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক গুরু
🔸 কংগ্রেসের নরমপন্থী ও চরমপন্থীর মাঝে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করেন

📢 ১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলনে গান্ধীজির পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ান এবং স্বদেশী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান।


🔥 স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনে অবদান

🔹 ব্রিটিশ পণ্য বর্জন, খদ্দরের ব্যবহার, জাতীয় শিক্ষা— সবকিছুর প্রবক্তা ছিলেন তিনি
🔹 নিজের মিল থেকে ব্রিটিশ পোশাক পুড়িয়ে দেন — এটা ছিল তাঁর সাহসিকতার অন্যতম নিদর্শন 🔥
🔹 "স্বরাজ" শব্দটি ভারতের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন তিনি


🧵 খদ্দরের প্রতি উৎসাহ

চিত্তরঞ্জন দাস নিজে খদ্দর পরতেন, অন্যদেরও উৎসাহিত করতেন।
তিনি কলকাতার বালিগঞ্জে নিজের খদ্দর উৎপাদন কেন্দ্র চালু করেন।

🧶 এ থেকে বোঝা যায় তিনি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী ছিলেন।


📰 সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চা

চিত্তরঞ্জন দাস ছিলেন সাহিত্যপ্রেমী, কবি ও সাংবাদিকও। ✍️

📘 তাঁর কবিতার বই:

  • "মালঞ্চ"
  • "মালয়"
  • "সাগর সঙ্গম"

🗞️ তিনি "Forward" নামক একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গণচেতনা গড়ে তুলেছিল।


🕊️ স্বরাজ দলের প্রতিষ্ঠা

🔹 ১৯২৩ সালে তিনি ও মোতিলাল নেহরু মিলে গঠন করেন স্বরাজ দল
🔹 কংগ্রেসের মধ্যেই থেকে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধাচরণই ছিল দলের মূল লক্ষ্য

এই দল কংগ্রেসের নীতিতে নতুন গতি নিয়ে আসে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে প্রাদেশিক পরিষদে ব্রিটিশ নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে। 🏛️


👨‍👩‍👧 ব্যক্তিগত জীবন

🔸 স্ত্রী: বসন্তকুমারী দেবী – তিনি নিজেও একজন সমাজকর্মী ছিলেন
🔸 তাঁদের সন্তানরাও শিক্ষিত ও সমাজচেতনা সম্পন্ন ছিলেন
🔸 চিত্তরঞ্জন দাস খুব সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন, মানুষের কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন ❤️


⛅ মৃত্যু ও উত্তরাধিকার

🔚 ১৬ জুন ১৯২৫, মাত্র ৫৫ বছর বয়সে দার্জিলিং-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

🙏 তাঁর মৃত্যুতে গোটা দেশ শোকাহত হয়। গান্ধীজি বলেন — “চিত্তরঞ্জনের মত মানুষ এক শতাব্দীতে একবার জন্মান।”

💐 আজও তাঁর নাম অমর হয়ে আছে অনেক স্থানে:

  • চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (CLW)
  • দেশবন্ধু কলেজ, কলকাতা
  • চিত্তরঞ্জন এভিনিউ (কলকাতা)
  • চিত্তরঞ্জন দাশ নগর, ঢাকা ও চট্টগ্রামে

❓ FAQ (প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন ১: চিত্তরঞ্জন দাস কেন "দেশবন্ধু" নামে পরিচিত?
উত্তর: কারণ তিনি নিজ জীবন উৎসর্গ করেছিলেন দেশের সেবা ও মানুষের কল্যাণে।

প্রশ্ন ২: অরবিন্দ ঘোষের মামলা কোন বছর এবং কী ছিল তাঁর ভূমিকা?
উত্তর: ১৯০৯ সালে আলিপুর বোমা মামলায় তিনি অরবিন্দ ঘোষের পক্ষে সাফল্যের সাথে মামলা লড়েন।

প্রশ্ন ৩: তিনি কোন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: মোতিলাল নেহরুর সঙ্গে মিলে "স্বরাজ দল" প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ৪: তিনি কোন ধরণের পোশাক প্রচার করতেন?
উত্তর: খদ্দরের পোশাক, যা ছিল আত্মনির্ভরতার প্রতীক।

প্রশ্ন ৫: তাঁর মৃত্যুর পর কোন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে ওঠে?
উত্তর: তাঁর নামে অনেক রাস্তা, কলেজ, হাসপাতাল ও স্টেশন গড়ে ওঠে, যেমন চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস।


🏁 উপসংহার

চিত্তরঞ্জন দাস ছিলেন একাধারে ব্যারিস্টার, রাজনীতিবিদ, কবি, সমাজসংস্কারক এবং এক আদর্শ মানুষ। তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল জনসাধারণের জন্য, দেশের জন্য।

💬 তিনি ছিলেন এমন একজন নেতা, যিনি জীবনের আরাম-আয়েশ, বিত্ত-বৈভব সব ত্যাগ করে দেশমাতার জন্য নিবেদিত হন।

🌼 আজকের তরুণ প্রজন্মের উচিত তাঁর মতো আত্মত্যাগী দেশপ্রেমিকদের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া।

🇮🇳 তাঁর অমর বাণী —

"সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে গেলে কষ্ট সহ্য করতেই হয়।"

চিত্তরঞ্জন দাস আজও আমাদের হৃদয়ে চিরজীবী ✨🙏