🧪 দৌলত সিং কোঠারি-র জীবনী

ভারতের আধুনিক বিজ্ঞান চেতনার পথপ্রদর্শক

👶 প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষাজীবন

🔹 পূর্ণ নাম: দৌলত সিং কোঠারি
🔹 জন্ম: ৬ জুলাই, ১৯০৬
🔹 জন্মস্থান: উদয়পুর, রাজস্থান, ভারত
🔹 পিতা: ড. মনেকলাল কোঠারি – বিশিষ্ট চিকিৎসক

📚 ছোট থেকেই বিজ্ঞান ও গণিতের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল।
তিনি উদয়পুরের সরকারি বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন।

🎓 এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে B.Sc (Physics), এবং পরে M.Sc সম্পন্ন করেন।

🎓 উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা

🔬 উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি যান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (ইংল্যান্ড) — সেখানেই বিজ্ঞানজগতের কিংবদন্তি আর্নেস্ট রাদারফোর্ড ও পল ডিরাক-এর অধীনে গবেষণা করেন।

📄 ১৯২৮ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত তিনি পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞান ও কোয়ান্টাম থিওরি নিয়ে কাজ করেন।

🧠 কর্মজীবন ও অবদান

🧑‍🏫 শিক্ষকতা ও গবেষণা

🔸 ১৯৩৪ সালে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের Physics Department-এর অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন।
🎓 তিনিই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের Department of Physics-কে ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গবেষণা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেন।

🛡️ প্রতিরক্ষা গবেষণার অগ্রদূত

🔰 দৌলত সিং কোঠারি ১৯৪৮ সালে ভারত সরকারের Scientific Adviser to the Defence Minister নিযুক্ত হন।

🔧 তিনি স্থাপন করেন:

• Defence Science Organisation (DSO)
• DRDO (Defence Research and Development Organisation)-এর ভিত্তি পাথর তিনিই রাখেন।

⚙️ তার নেতৃত্বে ভারতীয় সেনার জন্য তৈরি হয় উন্নত অস্ত্র, রাডার, বিস্ফোরক ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।

📘 কোঠারি কমিশন

📚 ১৯৬৪ সালে সরকার তাঁকে "Indian Education Commission"-এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে।

🎯 এই কমিশন পরবর্তীতে পরিচিত হয় "কোঠারি কমিশন" নামে।
মূল উদ্দেশ্য:

• সার্বিক শিক্ষা সংস্কার
• গণতান্ত্রিক, বিজ্ঞানমনস্ক ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি

🔎 রিপোর্টে বলা হয়:

“Education must be related to life, needs and aspirations of the people.”

📊 এই কমিশনের সুপারিশ অনুসারেই চালু হয়:

• ১০+২+৩ শিক্ষা কাঠামো
• ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম (NSS)
• বিজ্ঞান শিক্ষার উপর গুরুত্ব
• মানসিক ও নৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পাঠ্যক্রম সংস্কার

🏢 নেতৃত্ব ও প্রশাসন

🔹 তিনি ছিলেন:

• Indian National Science Academy (INSA)-র প্রেসিডেন্ট
• Indian Science Congress Association-এর প্রেসিডেন্ট
• UNESCO-র Education Panel সদস্য

🏛️ ১৯৬১-৭৩ সাল: তিনি ছিলেন University Grants Commission (UGC)-এর চেয়ারম্যান।

🏅 সম্মান ও পুরস্কার

🇮🇳 ভারত সরকার তাঁকে সম্মানিত করে:

• Padma Bhushan (১৯৬২)
• Padma Vibhushan (১৯৭৩)

🎖️ এছাড়াও তিনি বহু আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ করেন:

• Fellow of Royal Society
• Fellow of Indian Academy of Sciences
• UNESCO Laureate

❤️ ব্যক্তিগত জীবন

🔹 দৌলত সিং কোঠারি ছিলেন অত্যন্ত নম্র, নিঃস্বার্থ ও আদর্শবান মানুষ।
📖 তিনি ছিলেন শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও ছাত্রদের কাছে প্রিয় ‘গাইড’।

🎧 তিনি সংগীত, সাহিত্যে আগ্রহী ছিলেন এবং সরল জীবনযাপন করতেন।

🕯️ মৃত্যু

🔚 দৌলত সিং কোঠারি মৃত্যুবরণ করেন ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩ সালে।
তাঁর অবদান আজও ভারতের শিক্ষা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আলোকবর্তিকা হয়ে আছে। 🕯️

❓ প্রশ্নোত্তর (FAQs)

Q1: দৌলত সিং কোঠারির প্রধান অবদান কী?
👉 প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান ও শিক্ষানীতিতে যুগান্তকারী ভূমিকা।

Q2: DRDO-এর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী?
👉 তিনি DRDO-এর ভিত্তি স্থাপন করেন ও দীর্ঘ সময় নেতৃত্ব দেন।

Q3: কোঠারি কমিশনের প্রভাব কী ছিল?
👉 ভারতের আধুনিক শিক্ষানীতি গঠনে এই কমিশনের সুপারিশ ছিল পথপ্রদর্শক।

Q4: তিনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছিলেন?
👉 কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি।

Q5: তিনি কোন কোন সম্মান পেয়েছিলেন?
👉 পদ্মভূষণ (১৯৬২), পদ্মবিভূষণ (১৯৭৩), ও আন্তর্জাতিক বহু পদক।

🔚 উপসংহার

দৌলত সিং কোঠারি ছিলেন এমন একজন মহান বিজ্ঞানী, যিনি শুধু গবেষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না —
তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা, শিক্ষা এবং বিজ্ঞানচর্চায় এক নবদিগন্তের সূচনা করেছিলেন।

📚 শিক্ষা থেকে প্রতিরক্ষা – সর্বত্র তাঁর ছোঁয়া রয়েছে।
👨‍🔬 তিনি ছিলেন আদর্শ শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও সংগঠক।

🌟 তাঁর জীবন আমাদের শেখায় –

"সফলতা মানে কেবল নিজের উন্নতি নয়, সমাজকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।"