🧬 হরগোবিন্দ খোরানার জীবনী: জিনের ভাষা যিনি উন্মোচন করেছিলেন 🧠

🌱 প্রারম্ভিক জীবন

🔸 নাম: হরগোবিন্দ খোরানা
🔸 জন্ম: ৯ জানুয়ারি ১৯২২ 🗓️
🔸 জন্মস্থান: রায়পুর, পাঞ্জাব (বর্তমানে পাকিস্তানে) 🕌
🔸 জাতীয়তা: ভারতীয় 🇮🇳 → পরে মার্কিন নাগরিক 🇺🇸
🔸 পিতা: গঞ্জামাল খোরানা – একজন দেশী পাটওয়ারী 📜
🔸 পারিবারিক অবস্থা: দরিদ্র, কিন্তু শিক্ষাপ্রেমী পরিবার 📖

🔹 ছোটবেলাতেই হরগোবিন্দ দেখেন, শিক্ষার জন্য সংগ্রাম করলেও বইয়ের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে অনন্য করে তোলে। গ্রামের স্কুলে মাটির উপরে বসেই পড়াশোনা করতেন। 🙇‍♂️📚

🎓 শিক্ষাজীবন

🧑‍🏫 খোরানা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। ধাপে ধাপে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হিসেবে:

• 🏫 ডিপ্লোমা ও স্নাতক (১৯৪৩): পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি, লাহোর
• 🎓 পিএইচডি (১৯৪৮): ইউনিভার্সিটি অব লিভারপুল, ইংল্যান্ড
• 🧬 পোস্টডক্টরাল গবেষণা: সুইজারল্যান্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়

এইসব গবেষণার মাধ্যমে তিনি জিনতত্ত্ব (Genetics) ও নিউক্লিওটাইড সংক্রান্ত কাজের দিকে ঝুঁকতে থাকেন।

🔬 বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন

🔹 খোরানা মূলত গবেষণা শুরু করেন নিউক্লিক অ্যাসিড এবং প্রোটিন সংশ্লেষণ নিয়ে। তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান ছিল জিনের কোডিং ভাষা আবিষ্কার করা।

🧬 তাঁর গবেষণায় উঠে আসে—

• DNA তে তিনটি নিউক্লিওটাইড (triplet codon) মিলে একটি অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করে
• ৬৪টি সম্ভব কোডনের মধ্যে ২০টি অ্যামিনো অ্যাসিডের কোড রয়েছে
• এই কোডই হলো জীবনের ভাষা 🧫📜

🎖️ এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য তিনি ১৯৬৮ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

🧪 কর্মস্থল ও গবেষণাগার

🔬 খোরানার গবেষণা কর্মজীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র:

1. ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা 🇨🇦
2. উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র 🇺🇸
3. MIT (Massachusetts Institute of Technology) — এখানে তিনি দীর্ঘদিন গবেষণা করেন 🏛️

🏆 পুরস্কার ও সম্মান

🥇 নোবেল পুরস্কার (১৯৬৮): মার্শাল নিখোলাস এবং রবার্ট হলির সঙ্গে যৌথভাবে — জিনতত্ত্বে অবদানের জন্য
🎖️ ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৮৭): মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
🎓 মেম্বার অফ দি রয়্যাল সোসাইটি (FRS)
🇮🇳 ভারত সরকার তাঁকে Padma Vibhushan দিতেও চেয়েছিল, তবে তিনি তা গ্রহণ করেননি।

👩‍🔬 পারিবারিক জীবন

🔸 স্ত্রী: এস্টার এলিজাবেথ জনস্টোন (Esther Elizabeth Johnston) ❤️
🔸 সন্তান: তিনটি সন্তান — জুলিয়া, ডেভিড ও এমিলি 👨‍👩‍👧‍👦
🔸 এস্টার ছিলেন তাঁর জীবনের সাহস ও সমর্থনের উৎস, যিনি তাঁকে বিদেশে থাকতে মানসিক স্থিতি দিয়েছিলেন।

🌍 বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি

খোরানা বিশ্বাস করতেন:

“বিজ্ঞান শুধু একাডেমিক অর্জনের বিষয় নয়, এটি মানবকল্যাণের উপায়।”

🔹 তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র ও মিশুক মানুষ।
🔹 জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গবেষণার প্রতি তাঁর ভালবাসা অটুট ছিল।

📚 গুরুত্বপূর্ণ অবদান

🧬 জিনেটিক কোড উন্মোচন:
তিনি দেখিয়েছিলেন কীভাবে DNA-র নির্দিষ্ট অংশ প্রোটিন তৈরি করে।

🧪 কৃত্রিম জিন সংশ্লেষণ:
তিনি প্রথম সফলভাবে কৃত্রিম জিন তৈরি করেন, যা আজকের জিন ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজির পথপ্রদর্শক।

💉 বায়োমেডিকেল সায়েন্সে অবদান:
তাঁর আবিষ্কার ক্যানসার, জেনেটিক ডিজঅর্ডার এবং জৈবপ্রযুক্তি গবেষণায় দিকনির্দেশক হয়েছে।

🧠 FAQ (প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন ১: হরগোবিন্দ খোরানার প্রধান অবদান কী ছিল?
উত্তর: জিনেটিক কোডের গঠন এবং প্রোটিন সংশ্লেষণের কোড ব্যাখ্যা — যা জীবনের ভাষা উন্মোচন করে।

প্রশ্ন ২: তিনি কোন বছর নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর: ১৯৬৮ সালে, চিকিৎসা বিভাগে।

প্রশ্ন ৩: তাঁর জাতীয়তা কী ছিল?
উত্তর: জন্মসূত্রে ভারতীয়, পরে মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ৪: কৃত্রিম জিন কে প্রথম তৈরি করেন?
উত্তর: হরগোবিন্দ খোরানা — তিনি সফলভাবে কৃত্রিম জিন সংশ্লেষণ করেন।

প্রশ্ন ৫: তিনি কোথায় মারা যান?
উত্তর: ৯ নভেম্বর, ২০১১ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

🪔 উপসংহার

হরগোবিন্দ খোরানা ছিলেন এমন এক বিজ্ঞানী, যিনি নিজের সীমাবদ্ধতাকে জয় করে বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মান অর্জন করেছিলেন। গ্রামের ছেলে থেকে একজন নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী হয়ে ওঠার গল্প সত্যিই অসাধারণ।

🔹 তাঁর জীবন আমাদের শেখায়:

• স্বপ্ন দেখো, বাস্তবায়ন করো ✨
• প্রতিবন্ধকতা মানেই থেমে যাওয়া নয় 🛑
• বিজ্ঞান মানবতার কল্যাণে ব্যবহার করাই আসল সার্থকতা 🌍

🙏 তিনি আজও আমাদের বিজ্ঞানমনস্ক চেতনার পথপ্রদর্শক। তাঁর কাজ আগামী প্রজন্মকে প্রেরণা ও সাহস জোগাবে।