🖋️ নবীন চন্দ্র সেন এর জীবনী | বাংলা কাব্য সাহিত্যের এক আলোকবর্তিকা 🌟

👶 প্রারম্ভিক জীবন

🔹 নাম: নবীন চন্দ্র সেন
🔹 জন্ম: ১০ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৭
🔹 জন্মস্থান: চট্টগ্রাম, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)

নবীন চন্দ্র সেন ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিভাবান কবি, সাহিত্যিক ও ব্রিটিশ সরকারী কর্মকর্তা। তাঁকে বলা হয় "মহাভারতের কবি" এবং বাংলা মহাকাব্যের আধুনিক রূপকার। ✨

🎓 শিক্ষা জীবন

তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন।

🎓 ১৮৬৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে BA ডিগ্রি লাভ করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই তিনি কবিতা ও সাহিত্যচর্চার সাথে যুক্ত ছিলেন। ইউরোপীয় সাহিত্যের প্রভাবে তাঁর কাব্যে গাঢ় দার্শনিকতা ও মহাকাব্যিক রূপ লক্ষ করা যায়।

💼 কর্মজীবন

নবীন চন্দ্র সেন কর্মজীবনে ছিলেন একজন ব্রিটিশ সরকারি কর্মকর্তা।

• 📜 তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চাকরি করেন।
• কিন্তু সরকারি দায়িত্ব পালনের মাঝেও তিনি সাহিত্যচর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে তোলেন।

🖋️ সাহিত্যকর্ম ও অবদান

নবীন চন্দ্র সেন বাংলা সাহিত্যে মহাকাব্যের পুনর্জাগরণ ঘটান। তাঁর লেখায় দেশপ্রেম, ইতিহাস, পৌরাণিক উপাদান ও মানবধর্মের গাঢ় প্রভাব রয়েছে।

📚 তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থসমূহ:

1. পলাশীর যুদ্ধ (1875) – ব্রিটিশ শাসনের শুরু নিয়ে লেখা একটি বিখ্যাত কাব্য।
2. কুরুক্ষেত্র (1884) – মহাভারতের এক অসাধারণ আধুনিক রূপায়ণ।
3. রায়দিগন্ত (1888)
4. প্রভাস (1896)
5. পঞ্চবটী (1899)
6. তীর্থরেখা (1911)

এছাড়াও, তিনি একটি আত্মজীবনী রচনা করেন –
📝 "আমার জীবনী" – যা বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

🇮🇳 দেশপ্রেম ও ভাবাদর্শ

নবীন চন্দ্র সেনের রচনায় ছিল প্রবল দেশপ্রেম ও জাতীয় চেতনা।
🔹 তিনি পলাশীর যুদ্ধ-এ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের সূচনার ইতিহাস তুলে ধরেন।
🔹 কুরুক্ষেত্র কাব্যে মহাভারতের কাহিনি তুলে ধরে মানবধর্ম ও নৈতিকতার প্রশ্ন উপস্থাপন করেন।

✨ সাহিত্যধারা ও প্রভাব

তিনি মধুসূদন দত্ত-এর প্রভাবে কাব্যচর্চা শুরু করলেও, নিজস্ব কাব্যভাষা ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বাংলা কাব্যে এক নতুন ধারার সূচনা করেন।

📖 তাঁর লেখায় আধুনিকতা, পৌরাণিক পুনর্নির্মাণ এবং গভীর আধ্যাত্মিকতা ছিল প্রবলভাবে দৃশ্যমান।

🙏 মৃত্যুকাল

🕯️ মৃত্যু: ২৩ জানুয়ারি ১৯০৯
📍 মৃত্যুস্থান: কলকাতা, ব্রিটিশ ভারত

তাঁর মৃত্যু বাংলা সাহিত্যকে এক গভীর শূন্যতায় ফেলে দেয়।

❓ FAQ – নবীন চন্দ্র সেন

🔹 নবীন চন্দ্র সেন কেন বিখ্যাত?

তিনি বাংলা ভাষায় আধুনিক মহাকাব্যিক কাব্যরচনার জন্য বিখ্যাত, বিশেষ করে “পলাশীর যুদ্ধ” ও “কুরুক্ষেত্র” কাব্যের জন্য।

🔹 তিনি কোন পেশায় যুক্ত ছিলেন?

তিনি ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, পাশাপাশি একজন বিশিষ্ট কবি ও লেখক।

🔹 তাঁর আত্মজীবনীর নাম কী?

“আমার জীবনী” – এটি বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ আত্মজীবনীমূলক রচনা।

🔹 কোন কাব্যগ্রন্থে মহাভারতের পুনর্নির্মাণ ঘটান?

“কুরুক্ষেত্র” কাব্যে তিনি মহাভারতের কাহিনী আধুনিক রূপে উপস্থাপন করেন।

🧾 উপসংহার

🌟 নবীন চন্দ্র সেন ছিলেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অনন্য নাম। তাঁর সাহিত্য শুধু কবিতার শৈলীতেই নয়, এর বিষয়বস্তুর গভীরতাতেও অবিস্মরণীয়।
তিনি ইতিহাস, পুরাণ ও দর্শনকে কাব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করে বাংলা কাব্যধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন।

🎖️ তাঁর কাব্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় ইতিহাসের শিক্ষা, মানবতাবোধ এবং আত্মসচেতনতার গুরুত্ব।

🙏 আমরা এই মহান কবিকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করি।