👨‍💼 রাজীব গান্ধী এর জীবনী | ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

👶 প্রারম্ভিক জীবন

🔹 নাম: রাজীব রামনাথ গান্ধী
🔹 জন্ম: ২০ আগস্ট, ১৯৪৪
🔹 জন্মস্থান: বম্বে (বর্তমানে মুম্বাই), ভারত
🔹 পিতা: ফার্নান্দো গঞ্জালেস গান্ধী
🔹 মাতা: ইন্দিরা গান্ধী (ভারতের প্রধানমন্ত্রী)
🔹 ভাই: সঞ্জয় গান্ধী (রাজনীতিবিদ এবং বিমান দুর্ঘটনায় নিহত)

রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী'র ছেলে। তাঁর পরিবার ছিল ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার। তার পিতামহ নেহরু পরিবার-এর সদস্য ছিলেন, এবং তিনি জন্মগ্রহণ করেন ঐতিহাসিক পরিবেশে, যেখানে তাকে অনেক বড় দায়িত্বের দিকে ধাবিত হতে হয়েছিল।

🎓 শিক্ষাজীবন

রাজীব গান্ধীর শিক্ষাজীবন ছিল আন্তর্জাতিক রঙে রাঙানো:

📍 এলফিনস্টোন কলেজ, মুম্বাই
📍 হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র (এখানে বেশ কিছু সময় পড়াশোনা করেছিলেন তবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময় ভারতের রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহী হন)
📍 ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজ, যুক্তরাজ্য (এখানেই তিনি তার পঠন শেষ করেন)

রাজীব গান্ধী ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র, তবে তাঁর পছন্দ ছিল বিমানের পাইলট হওয়া। তিনি ব্রিটিশ অ্যারোস্পেস কোম্পানিতে যোগ দেন এবং এয়ার ইন্ডিয়া-র পাইলট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

🏛️ রাজনীতিতে প্রবেশ

🔔 ১৯৮১-এ রাজনীতির দুনিয়ায় প্রবেশ

১৯৮১ সালে, সঞ্জয় গান্ধীর অকাল মৃত্যুতে রাজীব গান্ধী রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন। তাঁর মা, ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে ভারতের কংগ্রেস পার্টি-তে আনেন এবং আমেঠি থেকে প্রার্থী হন।

🗳️ রাজীব গান্ধী প্রথমবার ১৯৮১ সালে নির্বাচিত হন এবং লোকসভার সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন।

🏛️ ভারতের প্রধানমন্ত্রী

🗳️ ১৯৮৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত

🔹 ইন্দিরা গান্ধী'র ১৯৮৪ সালের হত্যাকাণ্ডের পর রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৪০ বছর, ফলে তিনি ভারতের সবচেয়ে তরুণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন।

🕊️ রাজীব গান্ধী ছিলেন আধুনিকতার প্রতীক এবং তাঁর নেতৃত্বে ভারতের টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, ও শিক্ষায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসে।

🔧 রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অবদান

1️⃣ টেলিকমের বিকাশ

🔸 রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী হন, তখন ভারতের টেলিকম খাত ছিল উন্নতির পথে। তিনি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করতে উদ্যোগ নেন। এর ফলে দেশব্যাপী টেলিফোন সংযোগ বৃদ্ধি পায়, যার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

2️⃣ সাইবার যুগের সূচনা

🔸 রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ ঘটে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষা চালু করেন, যা ভারতের বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করে।

3️⃣ শিক্ষা সংস্কার

🔸 আইআইটি (IIT) ও আইআইএম (IIM)-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো উন্নত করার জন্য তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

🌏 আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

🔹 রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারতের শক্তি বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করেন।
🔹 তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এবং চীন–এর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নত করতে চেষ্টা করেন।

🕊️ শান্তির প্রচারক

রাজীব গান্ধী ছিলেন একজন শান্তির প্রচারক। তিনি শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান-এর সঙ্গে শান্তিরক্ষা চুক্তি করেন, যদিও শ্রীলঙ্কায় শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর বিষয়টি বিতর্কিত হয়।

⚖️ বিরোধিতা ও সমালোচনা

🔹 রাজীব গান্ধী তার সমালোচকদের থেকে "আধুনিক ভারত" নির্মাণের জন্য প্রচুর সমালোচনা পান।
🔹 বোভেসেল কেলেঙ্কারি এবং বেকারী কেলেঙ্কারি-এর জন্য তাঁর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছিল।
🔹 তবে অনেকেই মনে করেন, তিনি একজন যোগ্য নেতা ছিলেন, যিনি আধুনিক ভারতের ভিত রচনা করেছিলেন।

⚰️ মৃত্যুর পর

🔸 ১৯৯১ সালের মে মাসে, রাজীব গান্ধী শ্রীপেরী হত্যা হন। তামিল টাইগার (LTTE)-এর হাতে তার মৃত্যু ঘটে।

🔸 তাঁর মৃত্যু ভারতের রাজনীতিতে এক বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করে, এবং দেশের জনজীবনে তার অবদান এখনও স্বীকৃত।

❓ FAQ – প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

প্রশ্ন ১: রাজীব গান্ধী কখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন?
👉 রাজীব গান্ধী ১৯৮৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন।

প্রশ্ন ২: রাজীব গান্ধীর প্রধান অবদান কী ছিল?
👉 টেলিকমিউনিকেশন, তথ্যপ্রযুক্তি এবং শিক্ষা খাতে তাঁর অবদান অপরিসীম।

প্রশ্ন ৩: রাজীব গান্ধী কত বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হন?
👉 ৪০ বছর বয়সে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন।

প্রশ্ন ৪: রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড ঘটে কীভাবে?
👉 ১৯৯১ সালে, শ্রীপেরী বোমা হামলায় তাঁকে হত্যাকাণ্ড করা হয়।

📜 উপসংহার

রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের আধুনিকায়ন এর পুরোধা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষা, টেলিকমিউনিকেশন খাতের আধুনিকীকরণ, এবং শিক্ষায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গী সৃষ্টি করেন। তার শান্তির প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতি তাকে একটি সশক্ত এবং আধুনিক ভারত নির্মাণে সহায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর জীবন এবং মৃত্যু, ভারতের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। 🌟