🖋️ রঘুনাথ মুর্মু: অলচিকি লিপির জনক 🎓

ভারতের আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা সংরক্ষণে এক বিশাল অবদানের নাম হল রঘুনাথ মুর্মু। তিনি শুধুমাত্র একজন ভাষাবিদই ছিলেন না, ছিলেন একজন সমাজসংস্কারক, লেখক এবং শিক্ষানুরাগী। তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান হলো 'অলচিকি (Ol Chiki)' লিপির উদ্ভাবন, যা সাঁওতালি ভাষার নিজস্ব স্বীকৃত লিপি হিসেবে আজ সুপ্রতিষ্ঠিত।

📜 সংক্ষিপ্ত জীবনী

• জন্ম: ৫ মে ১৯০৫
• জন্মস্থান: দাংরিপোড়া গ্রাম, মায়ুরভঞ্জ, উড়িষ্যা
• মৃত্যু: ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
• পরিচয়: অলচিকি লিপির উদ্ভাবক, লেখক, নাট্যকার, সমাজ সংস্কারক

🌟 অলচিকি লিপি ও এর গুরুত্ব

সাঁওতালি ভাষা বহুদিন ধরে মৌখিকভাবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু কোন নিজস্ব লিপি ছিল না। এই ভাষাকে সঠিকভাবে লিখিতরূপে সংরক্ষণের জন্য রঘুনাথ মুর্মু ১৯২৫ সালে উদ্ভাবন করেন অলচিকি লিপি।
🔤 এই লিপির মাধ্যমে সাঁওতালি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক, নাটক ও সাহিত্য রচনা শুরু হয়।

📚 সাহিত্য ও শিক্ষায় অবদান

রঘুনাথ মুর্মু শুধু লিপি তৈরি করেই থেমে থাকেননি। তিনি অলচিকি লিপিতে অনেক নাটক ও শিক্ষামূলক বই রচনা করেন, যেমন:

• "কেলেন বডে" – নাটক
• "দিসোম ছাতকো" – শিক্ষামূলক বই
• "হোর হপন" – সমাজচেতনার গল্প

তিনি নিজের হাতে স্কুল খোলার উদ্যোগ নেন ও অলচিকি শিক্ষাব্যবস্থার প্রচার করেন।

🏅 সম্মান ও স্বীকৃতি

• পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যে রঘুনাথ মুর্মুর নামে বহু প্রতিষ্ঠান, সড়ক ও স্থাপনা রয়েছে।
• ২০২২ সালে ভারত সরকার তাঁকে "পদ্মশ্রী" সম্মানে ভূষিত করে (মরণোত্তর)।
• তাঁর জন্মদিন (৫ মে) "সাঁওতালি ভাষা দিবস" হিসেবে পালিত হয়।

❓সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)

🔹 রঘুনাথ মুর্মু কে ছিলেন?

তিনি ছিলেন একজন আদিবাসী সমাজসংস্কারক, লেখক ও অলচিকি লিপির উদ্ভাবক।

🔹 অলচিকি লিপি কী?

এটি সাঁওতালি ভাষার জন্য বিশেষভাবে উদ্ভাবিত একটি নিজস্ব লিপি, যাতে ৩০টি স্বতন্ত্র অক্ষর রয়েছে।

🔹 রঘুনাথ মুর্মুর সাহিত্যকর্ম কী কী?

তাঁর বিখ্যাত রচনার মধ্যে রয়েছে "কেলেন বডে", "দিসোম ছাতকো", "হোর হপন" প্রভৃতি।

🔹 তাঁকে কোন পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে?

তাঁকে ২০২২ সালে (মরণোত্তর) পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়।

🧾 উপসংহার

রঘুনাথ মুর্মু কেবল একজন ভাষাবিদ ছিলেন না—তিনি আদিবাসী সমাজের জাগরণে এক আলোকবর্তিকা। তাঁর তৈরি অলচিকি লিপি সাঁওতালি ভাষা ও সংস্কৃতিকে একটি নতুন পরিচয় দিয়েছে। আজ তাঁর প্রচেষ্টার ফলেই সাঁওতালি ভাষা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। 🙏